নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন থেকে পিরোজপুর ও শম্ভুপুরা ইউনিয়নের সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ গত কিছু দিন নির্মাণ শুরু হলেও গত কিছু দিন ধরে কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে আছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন, মানুষ,ছাত্রছাত্রী, চাকরিজীবী, রোগী ও বৃদ্ধরা যাতায়াত করেন।
এখন সেই স্থানে কাজ বন্ধ থাকায় তাদের পাড়ি দিতে হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বিকল্প হিসেবে যে ইটের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে, সেটিও বর্ষার পানিতে তলিয়ে যায়। ভাঙাচোরা, কাঁদামাখা, পিচ্ছিল সেই পথ দিয়ে চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
দুর্ঘটনার শিকার মিজানুর রহমান খান জানান, কিছুদিন আগে এই ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে অটোরিকশায় করে আসার সময় গাড়ি উল্টে যায়। এতে আমার হাত ভেঙে যায় এবং আমার সঙ্গে থাকা যাত্রীরাও আহত হন।” স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিকল্প রাস্তা মূল সড়ক থেকে অনেক নিচ দিয়ে গেছে, বর্ষায় তাতে পানি জমে যায়। সন্ধ্যার পর সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই, ফলে সড়কটি হয়ে উঠে মৃত্যুকূপের মতো ভয়ানক।
অফিসগামী মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও রোগীদের জন্য এই রাস্তাটি এখন এক ধরণের দুঃস্বপ্ন। পিরোজপুর ও শম্ভুপুরা ইউনিয়নের মানুষসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার হাজারো মানুষ প্রতিনিয়ত এই রাস্তায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
বিশেষ করে স্কুল-কলেজে যাতায়াতে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। দুর্বল এই রাস্তায় রেডিমিক্স কোম্পানির একটি বড় গাড়িও দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জনাব খোরশেদ আলম বলেন, মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” উপজেলা প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন জানান, আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি ও সরজমিন পরিদর্শন করেছি এবং ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা করছি সে আমাদের আশ্বাস দিয়েছে ২/১দিনের মধ্যে এর সমাধান করে দিবে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, বর্ষার পানি বাড়লে এই ভাঙা বিকল্প পথ সম্পূর্ণ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে। তখন যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
তারা জানান, যদি দ্রুত সমাধান না আসে, তবে তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ইতোমধ্যে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং সচেতন মহলও দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। প্রশ্ন রয়ে যায়—এত গুরুত্বপূর্ণ একটি অবকাঠামো কীভাবে এইভাবে থেমে থাকতে পারে? একটি ব্রিজ কি শুধু একটি কাঠামো? নাকি এটি এলাকার মানুষের জীবন ও জীবিকার সরাসরি অংশ?