সোনারগাঁয়ে হেফাজতের মিথ্যা মামলায় সাংবাদিক হাবীবকে গ্রেপ্তার - বার্তা প্রকাশ

সোনারগাঁয়ে হেফাজতের মিথ্যা মামলায় সাংবাদিক হাবীবকে গ্রেপ্তার

নিজস্ব সংবাদদাতা,সোনারগাঁনারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে ২০২১ সালে এপ্রিলের ৩ তারিখে খেলাফত মজলিস নেতা মাওলানা মামুনুল হক তার এক বন্ধু শহিদুল ইসলামের স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী পরিচয়ে ৫০১ নাম্বার রুমে ফুর্তি করার উদ্দেশ্যে অবকাশ যাপন করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় জনতার সাথে তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকরাও রয়েল রিসোর্টে যায়।সেই সময় রিসোর্ট কাণ্ডে গ্রেপ্তার হেফাজতে ইসলামের কর্মী মাওলানা ইকবাল হোসেনের মৃত্যুর তিন বছর পর হেফাজত কর্মি শাহাজাহান শিবলী বাদী হয়ে থানায় মামলা করে। সেই মামলায় বুধবার ধিবাগত রাত্র ১১ টায় চ্যানেল এস এর জেলা প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান হাবিবকে গ্রেপ্তার করে জেলা আদালতে পাঠিয়েছে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার ওসি এম এ বারী। এ ব্যাপারে গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক হাবিবের পরিবার ও সোনারগাঁয়ের সাংবাদিকগণ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।অবিলম্বে সাংবাদিক হাবিবের মুক্তি সহ মামলা থেকে সকল গণমাধ্যমকর্মীদের নাম প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন। সাংবাদিক হাবিবের পুত্র হাফেজ তাশফিকুর রহমান সাজিদ বলেন,আমার বাবা পেশায় একজন গণমাধ্যমকর্মী। তিনি সংবাদ সংগ্রহ করতে রয়েল রিসোর্টে গিয়েছেন। অথচ ষড়যন্ত্র করে আমার বাবাকে মিথ্যা হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন,২০২১ এর ৩রা এপ্রিল রয়েল রিসোর্টের ঘটনার পর ১১ এপ্রিল মাওলানা ইকবাল হোসেনকে ঢাকার জুরাইন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অথচ মামলার আর্জিতে বাদী বলেন, আসামিরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে কিল,ঘুষিসহ লোহার রড দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। আহত অবস্থায় তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে আদালতে পাঠান। ওই সময় পুলিশ তাঁকে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে। নির্যাতনে ইকবাল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২১ সালের ২০ মে মাওলানা ইকবাল মারা যান। হেফাজতের কর্মীরা যখন রয়েল রিসোর্টে ভাঙচুর চালায় তখন আমার বাবা সংবাদ সংগ্রহ করে কোনরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে বাড়িতে চলে আসেন, আর মাওলানা ইকবাল সাহেব মিছিল নিয়ে চৌরাস্তায় গিয়েছেন তিনি তো রয়েলে আসেননি। সে মামলায় আমার বাবা কিভাবে আসামী হন। সাংবাদিক হাবিবের বড় ভাই বলেন,মাওলানা ইকবালের মৃত্যুর সাথে আমার ভাইয়ের কোন সম্পর্ক নেই। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার,কেরানীগঞ্জ এর প্রতিবেদন প্রমান করে মাওলানা ইকবাল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ মে মারা যান। আমার ভাইকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। অন্তবর্তীকালিন সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার। সাংবাদিক হাবিব বলেন,আমি গণমাধ্যমকর্মী। সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে কোন জায়গায় যেতে পারি। এটা আমার অপরাধ নয় এটাই আমার দায়িত্ব। আমাকে একই বিষয়ে কয়েকশত হেফাজত কর্মী আমার বাড়িতে হামলা করে মারধর করেছে। এখন আবার মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে যা মুক্ত সাংবাদিকতায় চরম বাধা বলে আমি মনে করি। মামলার বাদীর দ্বিতীয় স্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে বাদী কর্তৃক নির্যাতনের বিষয়ে একটি সংবাদ প্রচার করায় ব্যক্তি আক্রোশে তিনি আমাকে আসামী করেছেন। তাছাড়া ইকবাল মাওলানার পরিবারের কেউ মামলা করেনি তিনি কোন অধিকারের মামলা করলেন এবং পুলিশই বা একজন ভূয়া বাদীর মামলা কোন আইনে নথীভূক্ত করে আমাকে গ্রেপ্তার করলেন এ প্রশ্নের জবাব আমার জানা নেই। আমি সরকারের কাছে এ মিথ্যা মামলা থেকে আমাকে অব্যাহতির দাবী জানাই। এছাড়াও মামলায় নারায়ণগঞ্জের সাবেক দুই সংসদ (এমপি) সদস্য, সাবেক পুলিশ সুপার ও আরোও দুই সাংবাদিকসহ ১২৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে।সোনারগাঁয়ের গণমাধ্যমকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা ভেবেছিলাম অন্তবর্তীকালিন সরকারের আমলে সাংবাদিকরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে কিন্তু কিছু মানুষ মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের চুটি চেপে ধরার অপকৌশল করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা করছে। মিথ্যা মামলা থেকে দেশের সকল গণমাধ্যমকর্মীদের অব্যাহতির জোড় দাবী জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *